রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুলের মৃত্যুর ঘটনায় আমার জড়িত থাকার কোন কারণ নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য করো করো কাছে এই লাশটি দরকার ছিল বলে আমার মনে হয়।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে রাজশাহী নগর ভবনে মেয়রের দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মেয়র লিটন বলেন, আজ আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফুল ইসলাম বাবুলের জানাজার নামাজে যেভাবে আমাকে দায়ী করে আমার নাম ধরে আমার দলীয় পদ-পদবী উল্লেখ করে চারঘাট-বাঘা আসনের এমপি যে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য হয়তো এটি করতে পারেন।
তিনি বলেন, আমরা একজন কর্মঠ দলীয় কর্মীকে হারালাম। এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দবি করে তিনি বলেন, করো করো কাছে বোধ হয় লাশটি দরকার ছিল রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। ঘটনাটিতে একটি ষড়যন্ত্র ছিল বা আছে বলেই মনে হচ্ছে। মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকারও কথা বলেন লিটন।
এর আগে সকাল ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার আগে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সে সময় তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ বাঘাকে অশান্ত করোর চেষ্টা বহুদিন থেকে। বাবুল হত্যার বিষয়ে পেছন থেকে যারা মদদ দিয়েছেন তাদের মধ্যে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও পবা-মোহনপুরের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদ তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে বিচার করে ফাঁসিতে ঝোলানো হবে।
এই যে ব্যক্তি কয়েক জনের নাম বললাম তাদের সাথে আসামীর ফোন নম্বরের সাথে ৭ দিনের ফোন নম্বর মিলিয়ে নেবেন তাদের সাথে যদি দিনে ৫ বার করে কথা না হয় আমি সংসদ পদ থেকে ইস্তেফা দিয়ে দিবো।
এ সময় তিনি কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নাম উল্লেখ করে তারা কেন জানাজায় আসেনি জানতে চান। তিনি বলেন, তাদের সৎ সাহস নেই। প্রয়োজনে তাদের নামে মামলা করে আইনের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো হবে।
শাহরিয়ার আলম রাজশাহী-৫ (চারঘাট-বাঘা) আসনের এমপি আরও বলেন, প্রকাশ্যে কিংবা পশ্চাতে থেকে কেউ মদদ দিয়ে থাকলে তারা এই জানাজা থেকে চলে যান।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুন বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকে উপজেলা পরিষদের সামনে বাঘা পৌরসভার মেয়র আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। একইদিনে উপজেলা সচেতন নাগরীকের ব্যানারে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির জমি রেজিষ্ট্রিতে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে লায়েব-আক্কাছ সমর্থিতরা।
উপজেলা পরিষদেও সামনে দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল গুরুত্বর আহত হয়। এতে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে আইসিইউতে নেওয়া হয়। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৬ জুন তার মৃত্যু হয়।