ভোলার দৌলতখানে কবরস্থানের জায়গা না পেয়ে জবেদা খাতুন (৭০) নামে এক বৃদ্ধাকে নিজের ঘরের মেঝেতেই দাফন করেছেন সন্তানরা। দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আজি মদ্দি সরদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। জবেদা খাতুনের দুই ছেলে সফিজল ও রফিজল ছাড়াও জাহানারা ও জরিনা নামে দুই মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. রায়হান ও মো. হারুন জানান, মৃত জবেদা খাতুনের ছেলে রফিজলের সঙ্গে একই বাড়ির তার চাচাতো ভাই রফিকের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে বৃদ্ধা মারা গেলে তাকে রফিকের পারিবারিক কবস্থানে দাফন করতে গেলে তারা বাধা দেয়।
এলাকাবাসী ও মৃতের স্বজনরা অনুনয়-বিনয় করে রফিক গংদের একাধিকবার বুঝিয়েও তাদের মন গলাতে পারেনি। পরে বুধবার (৩ জুলাই) তার ছেলেরা কোনো জায়গা না পেয়ে তাকে তাদের ঘরের বারান্দা খুড়ে মেঝেতেই দাফন করেন।
এ ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সঙ্গে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কবর দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে রফিজলের বাড়িতে ভিড় করছেন শত শত মানুষ।
এদিকে, ঘটনা জানাজানি হলে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে কবরটিকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে রফিকসহ তার পরিবার এবং সন্তানদের কবরটি সরিয়ে নিতে চাপ দেয়া হয়ও বলে জানা যায়।
মৃত জবেদা খাতুনের ছেলে রফিজল বলেন, মা মারা যাওয়ার পর দাফনের জন্য একটু জমি খুঁজছি, কেউ দেয় নাই। সাড়ে ৩ হাত জমির জন্য মারে কবর দিতে পারি নাই, অহন আবার কবর তুলতে কয়, আমরা গরিব মানুষ কই যামু, মার কবর তুলমু না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতখান থানার ওসি সত্য রঞ্জন খাসকেল জানান, জবেদা খাতুন নামে এক বৃদ্ধার কবর ঘরের মেঝেতে দেয়া হয়েছে শুনে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অনেকেই কবরটিকে সরিয়ে নেয়ার জন্য বলছেন, যদি তার ছেলে ও তার পরিবার মনে করে কবরটি সরিয়ে নেয়া হোক তাহলে নেবেন, আর যদি না চান এখানেই থাকবে।