শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের সময় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘যিনি পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি অবশেষে তার করুণ পরিণতি ভোগ করেছেন।’ গতকাল বুধবার (২১ আগস্ট) ইসলামাবাদে ন্যাশনাল ইয়ুথ কনভেনশনে এমন মন্তব্য করেন শেহবাজ শরিফ।
ভাস্কর্য ভাঙচুরের প্রসঙ্গে শেহবাজ শরিফ আরও বলেন, ‘যিনি খারাপ কাজ করবেন তা ফের তার ওপরই আসবে। শেখ মুজিবুর রহমান এই অবিভক্ত পাকিস্তানকে দুই ভাগ করেছিলেন।’ এ সময় তরুণদের উদ্দেশ করে শেহবাজ শরিফ বলেন, আমরা যদি পাকিস্তানকে পরিবর্তন করার প্রতিজ্ঞা করি, তখন খুব বেশি দূরে নয় যখন দেশটি একটি মহান জাতি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
আজকের পাকিস্তান এবং বিরাজমান পরিস্থিতিতে রাজনীতিবিদ এবং জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সাংবিধানিক এবং অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে মাথায় রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের সেবা করতে হবে। যদি আমরা তা করতে পারি তবে ইতিহাস আমাদের চিরকাল মনে রাখবে অন্যথায় ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের কখনই ক্ষমা করবে না।’ খবর জিও নিউজটিভি।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ক্ষুব্ধ জনতা তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের বেশ কয়েকটি মূর্তি, ছবি এবং ম্যুরাল ভাঙচুর করে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বোন শেখ রেহানার সঙ্গে সামরিক উড়োজাহাজে ভারতে পালিয়ে যান।
উত্তাল আন্দোলন ও দাঙ্গার মুখে হাসিনা সরকারের পতনের ঘটনাটি দেশটির ৫০ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক। জুলাইয়ের শুরুতে শুরু হওয়া এই সহিংসতায় নিহত হয়েছে প্রায় ৩০০ মানুষ, আহত হয়েছেন কয়েক হাজার।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনকারীরা গত মাসে তাদের সমাবেশ শুরু করে। বড় ধরনের ওই বিক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সরকার উৎখাতের আন্দোলনে রূপ নেয় এবং হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের লজ্জাজনক পরিণতি হয়। প্রতিবাদকারীরা ৭৬ বছর বয়সী এই কর্তৃত্ববাদী হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করেন।