সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পেছনে ৪ জনকে দায়ী করেছেন আত্মগোপনে থাকা দলটির এক নেতা। তিনি জানিয়েছেন, আন্দোলন চলাকালে শেখ হাসিনা কারও কথা শোনেননি। শুধু ৪ জনের ওপর তার অন্ধবিশ্বাস ছিল; যা পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পতন ডেকে আনে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছে আত্মগোপনে থাকা ওই নেতা।
এই ৪ জনকে ‘গ্যাং অব ফোর’ আখ্যা দিয়ে আত্মগোপনে থাকা ওই নেতা বলেন, এই ব্যক্তিদের ওপর তার (শেখ হাসিনা) ছিল অন্ধবিশ্বাস। তিনি আমাদের কথা শোনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, যা তাকে মাঠের বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। চারজনের এই দল তার (হাসিনা) পতন ডেকে এনেছে।
‘ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ না, প্রতিবেশীর ন্যায় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক হবে’‘ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ না, প্রতিবেশীর ন্যায় ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক হবে’
আত্মগোপনে থাকা ওই নেতা জানান, যে চারজন পতন ডেকে এনেছেন তারা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
এদিকে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে ভারত চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর ফলে শেখ হাসিনা ‘নেতা-কর্মীদের জীবন বিপদের মধ্যে ফেলেছেন’ দাবি করে আত্মগোপনে থাকা আরেক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমরা একটা সময়ই শুধু বাড়ি থেকে বের হওয়ার সুযোগ পাই। যখন বেলা ৩টার দিকে সেনাপ্রধান জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ও মানুষ তা শুনতে টেলিভিশনের পর্দায় নজর রাখছিলেন।’
আত্মগোপনে থাকা আরেক নেতা ও মন্ত্রী (সাবেক সরকারের) বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা ধরা পড়লে লোকজন আমাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারতেন।’
আওয়ামী লীগের অপর এক নেতার মতে, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, পুলিশি অত্যাচারের কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছিল, তা আমরা বুঝছিলাম। গত নির্বাচনে বিএনপিকে নিয়ে আসতে পারলে সেই ক্ষোভ হয়তো থামানো যেত। তাতে আমরাই জয়ী হতাম এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে পারতাম।
শেখ হাসিনা অনেক বেশি একগুঁয়ে হয়ে ওঠেন, বিশেষ করে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনে জয়লাভের পর এবং কোনো পরামর্শে কান দেন না। টানা চতুর্থ জয়ের পর তিনি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে ক্ষোভের মাত্রা দেখতে পাননি, বলেন ওই নেতা।