15 C
Dhaka
Monday, December 23, 2024

‘বলে দিলে হয় আপনাদের ফাঁসি রেডি, দড়ি দিলেই হয়’

‘বলে দিলে হয় আপনাদের ফাঁসি রেডি, দড়ি দিলেই হয়।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় এভাবেই ঔদ্ধত্যপূর্ণ বাক্য উচ্চারণ করেন সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান জিয়া।

বুধবার (২০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আদালতে জিয়াউল আহসানসহ আটজনকে হাজিরা করা হয়। তাদের শোন অ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।

অন্য কর্মকর্তারা হলেন- সাবেক পুলিশ প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, মিরপুরের সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মো. মাজহারুল হক এবং ডিবি ঢাকা উত্তরের সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।

আরও পড়ুনঃ  অবশেষে আটক ওবায়দুল কাদেরের...

গ্রেপ্তার দেখানোর পর তাদের আটজনকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে জিয়াউল আহসান ঔদ্ধত্যপূর্ণ এই বাক্য উচ্চারণ করেন।

এদিন সকাল ১০টার পর দুটি প্রিজনভ্যানে আট আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পৌনে ১১টার দিকে তাদের ট্রাইব্যুনালের এজলাসে নেওয়া হয়। ১১টা ২০ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

প্রথমে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ওকালতনামায় স্বাক্ষর নেওয়ার আবেদন করেন। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এতে আপত্তি করেন। জেলখানায় গিয়ে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা বলেন তিনি।

আদালত বলেন, ‘আজকের জন্য হোক। এরপর আর না। আমরাই তো বলেছি।’ পরে আইনজীবীরা আসামিদের স্বাক্ষর নেন।

চিফ প্রসিকিউটর আট আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ তুলে ধরেন। ৩০ মিনিটের মতো তিনি এসব অভিযোগ পড়ে শোনান। আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে দুই মাস সময় চান প্রসিকিউটর।

আরও পড়ুনঃ  বৃষ্টি কতদিন থাকবে, জানালো আবহাওয়া অফিস

এ সময় জিয়াউল আহসানের পক্ষে তার আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, ‘জিয়াউল আহসান কিছু বলতে চান।’ আদালত অনুমতি না দিলেও কথা বলা শুরু করেন জিয়াউল আহসান; তিনি বলেন, ‘মাই লর্ড, আমি কখনো আয়না ঘরে চাকরি করিনি। ফেসবুকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে আয়না ঘরের কথা।’

এ পর্যায়ে জিয়াউল আহসানকে থামিয়ে আদালত বলেন, ‘আপনার আইনজীবী আছেন, তারা বলবেন। তাতে সন্তুষ্ট না হলে আপনি বলবেন।’

এরপর জিয়াউল আহসান বলেন, ‘যেখানে চাকরি করেছি- টেকনিক্যাল জিনিস। এ কথা বুঝাতে পারছি না।’

এরপর নাজনীন নাহার একটি আবেদন করেন, যাকে ‘যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ’ না হওয়ায় প্রসিকিউটর এতে আপত্তি করেন। পরে এ বিষয়ে আর শুনানি হয়নি। আদালত আগামী ১৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করতে সময় বেঁধে দেন। ১২টা ৫ মিনিটের দিকে আদালতের কার্যক্রম শেষ হয়।

আরও পড়ুনঃ  পরীর মেয়ের নাম সাফিরা সুলতানা, নিয়ম মেনেই নিয়েছেন দত্তক

তখন আসামিদের ডক থেকে হাজতখানায় নেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। এ সময় জিয়াউল আহসান বলেন, ‘এনটিএমসিকে সবাই ফলো করে। এনটিএমসি কাউকে ফলো করে না। আমাদের কাগজ দরকার। আমরা বক্তব্য দিব না? জেলখানায় বসে লেখার সুযোগ দিতে হবে। জেলখানা কর্তৃপক্ষ একটা কলম পর্যন্ত দেয় না লিখতে।’

এরপর তাদের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাদের সবাইকে। সেখানে গিয়ে জিয়াউল আহসান বলেন, ‘বলে দিলে হয় আপনাদের ফাঁসি রেডি। দড়ি দিলেই হয়।’

এর আগে শুনানি চলাকালে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে থাকেন জিয়াউল আহসান। দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য তার কাছে গিয়ে তাকে বসতে বলেন। জিয়াউল আহসান তাকে বলেন, ‘তুমি বাইরে যাও।’

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ পড়ুন
জনপ্রিয় সংবাদ