মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিষয়ে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ বলেছেন, সরকারকে বিব্রত করতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আমেরিকার এমন নিষেধাজ্ঞায় কিছু আসে যায় না। আল্লাহ আমাকে অনেকবার আমেরিকায় নিয়েছে। আমেরিকা না গেলে কিছু আসে যায় না। তারা আমার ওপর অবিচার করেছে।
আজ মঙ্গলবার (২১ মে) একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ।
তার ওপর আরোপ করা অভিযোগের বিষয়ে আজিজ আহমেদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে দুটি অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্যিই অপ্রত্যাশিত। আমি চার বছর বিজিবি (সাবেক বিডিআর) প্রধান এবং তিন বছর সেনা বাহিনীর প্রধান ছিলাম। এসময়ের মধ্যে আমি আমার কোনো ভাইকে টেন্ডারে একটি কাজও দেইনি। এমন কোনো প্রমাণও কেউ দেখাতে পারবে না। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন, তাহলে যেকোনো শাস্তি আমি মেনে নিতে রাজি আছি।
যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগের সঙ্গে আল জাজিরায় প্রচারিত রিপোর্টের সংযোগ থাকতে পারে বলেও জানান আজিজ আহমেদ।
যুক্তরাষ্ট্র এ নিষেধাজ্ঞার আরোপ করার আগে তাকে ব্যক্তিগতভাবে জানানো হয়েছিল কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ আহমেদ বলেন, আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
একজন সাবেক সেনাপ্রধান হিসেবে আপনার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আজিজ আহমেদ বলেন, আমি এমন কোনো কাজ করিনি যাতে সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন হবে। আমি সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।
এর আগে সীমাহীন দুর্নীতি ও ক্ষমতার মারাত্মক অপব্যবহারের অভিযোগে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) যুক্তরাষ্ট্র সাবেক এ প্রভাবশালী সেনা কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে অযোগ্য ঘোষণার কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের উদ্ধৃতি দিয়ে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ দুর্নীতিতে সম্পৃক্ততার কারণে বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদকে ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট, ফরেন অপারেশন অ্যান্ড রিলেটেড প্রোগ্রামস অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্টের ৭০৩১ (সি) ধারার আওতায় অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। এর ফলে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য হবেন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আজিজ আহমেদের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অবমূল্যায়ন এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা কমেছে।’