রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়িতে চৈতী মজুমদার (২৫) ও অভিষেক দাস (৩২) নামের দুইজন স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতো। শনিবার (৮ জুন) চৈতীকে জানালার সঙ্গে চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বিকেল সাড়ে ৫টায় তাকে হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উত্তরা ৫ নং সেক্টরের ৩ নং সড়কের ৪০ নম্বর বাড়িতে থাকতেন তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বাসায় স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে দুই মাস ধরে বসবাস করে আসছিলেন চৈতী ও অভিষেক দাস। বাসার মালিক সরকারি প্রকৌশলী মো. শাহিদুল ইসলাম। স্বামী–স্ত্রী পরিচয়ে থাকলেও জানা যায়, অভিষেক ও চৈতী গার্লফ্রেন্ড–বয়ফ্রেন্ড ছিলেন।
চৈতী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। সাভারের জিরাবো এলাকার মিলেনিয়াম টেক্সটাইলস সাউদার্ন গার্মেন্টসে প্ল্যানিং ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করতেন। তিনি যশোরের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার চিত্তরঞ্জন মজুমদারের মেয়ে। থানা–পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চৈতী পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে চৈতী অভিষেককে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো।
ভবনটির আশেপাশের বাসিন্দা ভবনটির বাসিন্দারা জানান, অভিষেক ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। তার চিৎকার শুনে দরজার তালা ভেঙে চৈতীকে জানালার সঙ্গে চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায়। উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। চৈতীর বাবা চিত্তরঞ্জন মজুমদার বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি আমার মেয়ে নাই! মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম চৈতী তার বান্ধবীর সঙ্গে থাকে। কিন্তু আসলে যে অন্য ঘটনা, সেটি বুঝতে পারিনি। আমি হত্যার বিচার চাই। এটি শতভাগ পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
এ ঘটনায় তার কথিত প্রেমিক অভিষেক দাস ও তার বন্ধু সাগরকে (৩১) হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহমুদা খাতুন বলেন, ‘নিহতের গলা ছাড়া অন্য কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’
একই থানার এসআই মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। নিহতের বাবাও অভিযোগ দিচ্ছেন। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।’