ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলি জিম্মি উদ্ধারের নামে গাজা উপত্যকায় ব্যাপক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় নুসিরাত শরণার্থী শিবির ও মধ্য গাজার অন্যান্য এলাকায় ২১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শনিবার (৮ জুন) গাজা সরকারের গণমাধ্যম দপ্তর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
শনিবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাজুড়ে বিমান, স্থল ও সমুদ্রপথে তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। বিশেষ করে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ ও নুসিরাত শরণার্থী শিবির, দক্ষিণের রাফা শহর এবং উত্তরের গাজা সিটির একাধিক এলাকায় এই হামলা চালিয়েছে তারা। আলজাজিরার তথ্য।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া বহু আহত মানুষকে আল-আকসা শহীদ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
মন্ত্রণালয় বলছে, কয়েক ডজন আহত মানুষ মাটিতে পড়ে আছে। তাদের কাছে যে নামমাত্র সরঞ্জাম আছে, তা দিয়ে আহতদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে মেডিকেল টিম। তবে তাদের কাছে ওষুধ ও খাবারের ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া জ্বালানির অভাবে হাসপাতালের প্রধান জেনারেটর কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।
এর আগে গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের হাতে বন্দি চার ইসরায়েলি জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই চার ইসরায়েলিকে নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের কেন্দ্রস্থলের দুটি আলাদা স্থান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া চার ইসরায়েলি বন্দি হলেন, নোয়া আরগামানি (২৫), আলমোগ মীর জান (২১), আন্দ্রে কোজলভ (২৭) এবং শ্লোমি জিভ (৪০)। এই চারজনকেই গত ৭ অক্টোবরের হামলার সময় দক্ষিণ ইসরায়েলের সংগীত উৎসব থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন হামাস যোদ্ধারা।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর এমন দাবির পরই ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, মধ্য গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার নুসিরাতে ব্যাপক ড্রোন ও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের হামলায় নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে। তবে হামলায় এত এত ফিলিস্তিনি নিহত হলেও তাদের কথা একবারের জন্যও মুখে আনেননি ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার পর বেশ কয়েকজন রক্তাক্ত রোগীর ছবি প্রকাশ করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এসব রোগীর মধ্যে শিশুও রয়েছে। এ ছাড়া দেইর এল-বালার আল-আকসা শহীদ হাসপাতালের করিডোরে অনেককে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন।