প্রতিষ্ঠানে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন মিলিয়ে মোট ২০ দিনের ছুটি চলছে। গত ১৩ জুন শুরু হওয়া এ ছুটি আগামী ২ জুলাই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সেই ছুটি সাতদিন কমানোর ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ঈদুল আজহার ছুটি বাদে গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল হতে এমন আভাস দিয়েছে শিক্ষা প্রশাসন। সেক্ষেত্রে ছুটি শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ আগেই খুলতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই সিদ্ধান্ত নিতে আজ (বৃহস্পতিবার) বৈঠকে বসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে ছুটি কমবে কি না।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, আজ বেলা ১১টায় শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হবে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে। পরে মন্ত্রী ব্রিফিং করে আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। তবে ছুটি সাতদিন কমতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ছুটি সংক্ষিপ্ত করার পরিকল্পনার কারণ হিসেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হলো– নতুন কারিকুলামে চলতি বছরের বেশ গ্যাপ রয়েছে। শীত ও অতি গরমের কারণে এবার ১৫ দিনের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সেই ক্ষতি পোষাতে গ্রীষ্মের ছুটি কাটছাঁট করা হবে। সেক্ষেত্রে শীতকালীন ছুটি কিছুটা বাড়তে পারে। পাঠদানের কর্মদিবস সারা বছরব্যাপী কমেছে। এ ছাড়া শনিবারের বন্ধ পুনর্বহাল রাখার কারণে কর্মদিবস কমে যাবে। তাই গ্রীষ্মের ছুটি এক সপ্তাহ কমতে পারে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর সৈয়দ জাফর আলী গত মঙ্গলবার ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, গ্রীষ্মের ছুটি কমানোর বিষয়ে একটি প্রস্তাব রয়েছে। এখন কি করবে, সেই সিদ্ধান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আবহাওয়ার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় জুন-জুলাই মাসে অতি গরম থাকে। এসময় ছুটি দেওয়া না দেওয়া সমান কথা। আমার প্রস্তাব হলো, গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করে তা শীতের ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করা।
গত বছর ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করা হয়। গেল বছরে ছুটি বাতিলের যুক্তি ছিল– দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হবে। এর আগে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হবে। সেই কারণে এ ছুটি বাতিল করা হয়। গত বছরের শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী, ২০ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন ছুটি ছিল। বাতিল করা গ্রীষ্মকালীন ছুটি পরে শীতকালীন ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, চলতি বছরের শুরুতে তীব্র শীত এবং মাঝামাঝি সময়ে প্রচণ্ড গরমের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে। এর ফলে শিখন ঘাটতি তৈরি হয়েছে। আবার নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী যেসব শ্রেণিতে পাঠদান হচ্ছে, সেসব শ্রেণিতে জুলাই মাসে অনুষ্ঠাতব্য ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের প্রস্তুতিও ভালো হয়নি। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সিলেবাস শেষ করতে পারেনি। এজন্য একটি সভার মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।